ডেস্ক : এ যেন প্রতিশোধের ম্যাচ ছিলো রিয়াল মাদ্রিদের জন্য। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে এই চেলসির বিপক্ষে হেরেই বাদ পড়েছিলো রিয়াল। তবে এবার সেমিতে যাওয়ার লক্ষ্যে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে চেলসিকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে আসরের সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ।

বুধবার রাতে চেলসির মাঠ স্টামফোর্ড ব্রিজে বেনজেমার হ্যাট্রিকে এ জয় পায় রিয়াল মাদ্রিদ। এর আগে রাউন্ড ১৬ তে এই বেনজেমাই হ্যাট্রিক করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বাদ করেছিলো ফরাসি জায়ান্ট ক্লাব পিএসজিকে। আসরে টানা দ্বিতীয় হ্যাট্রিকের মধ্যে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি মৌসুমে আট ম্যাচে ১১ গোলের দেখা পেলেন বেনজেমা। ম্যাচে চেলসির হয়ে একমাত্র গোলটি করেন কাই হ্যাভার্টজ।

এর আগে ম্যাচ শুরুর ১০ মিনিটেই প্রথম গোলের দেখা পেতে পারত রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি তখন। বেনজেমার পাস থেকে ভিনিসিউসের নেয়া দুরন্ত শট গিয়ে লাগে চেলসির বারে। তবে এর আগে চেলসিও ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলো। কিন্তু ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিক রিয়ালের ডি বক্সে ঢুকে বল মারেন গোল বার উড়িয়ে। ম্যাচের ১৪ মিনিটে চেলসির দুর্দান্ত ফ্রি কিক রুখে দেন রিয়াল গোল রক্ষক থিবো কর্তোয়া।

প্রতি আক্রমণে গিয়ে ভিনিসিউস একাই বল পায়ে ঢুকে পড়েন চেলসির ডি বক্সে। প্রথম গোলের এসিস্ট ও তার থেকেই এসেছে। ম্যাচের ২১ মিনিটে ডি বক্সের বাম কর্নার থেকে ভিনিসিউসের শট, হেডের সাহায্যে চেলসির জালে জড়ান করিম বেনজেমা। লাফিয়েও বলের নাগাল পাননি চেলসি গোলরক্ষক এডওয়ার্ড। পিএসজির বিপক্ষে যে ঝলক দেখিয়েছেন বেনজেমা, তার পুনরাবিত্তি যেন স্টামফোর্ড ব্রিজেও গড়তে চলেছিলো এবং সেটাই হলোও।

মাত্র ২ মিনিটের ব্যবধানে আবারও তার হেডে কেঁপে ওঠে চেলসির জাল। এবার ডি বক্সের বাইরে থেকে বল বেনজেমার উদ্দেশে বাড়িয়ে দেন ক্রোশিয়ান ম্যাজিশিয়ান লুকা মদ্রিচ। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ভালোভাবেই রিয়ালকে চেপে ধরার চেষ্টা করেছে চেলসি। তবে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের রক্ষণ দেয়াল টপকাতে পারেনি তাদের প্রচেষ্টা।

৩৫ মিনিটে কন্তের শট দেয়াল টপকালেও, তা গিয়েছে বারের উপর দিয়ে। ৩৭ মিনিটে সিলভাও করেছেন একই কাজ। তবে ম্যাচের ৪০ মিনিটে চেলসির মুখে হাসি ফোটান হ্যাভার্টজ। জর্জিনিয়োর বাড়ানো শট হেডে কর্তুয়াকে পরাস্ত করে জালে বল জড়ান তিনি।

হাফ টাইমের আগেই হ্যাট্রিকের সুযোগ পেয়েছিলো বেনজেমা। ৪২ মিনিটে ভিনিসিউসের বাড়ানো শট ডি বক্সে ঢুকে পা ছোঁয়ালেও তা বার ঘেষে বেরিয়ে যায়।

তবে হাফ টাইমের পর আর বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় না হ্যাট্রিকের জন্য এ ফরাসি স্ট্রাইকারকে। ম্যাচের ৪৬ মিনিটে চেলসি গোলরক্ষক বার ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিজ দলের খেলোয়াড়কে পাস দিতে গেলে এগিয়ে গিয়ে বল দখলে নেন বেনজেমা। আলতো শটে বল জালে জড়িয়ে উল্লাসে মাতেন হ্যাট্রিকের। তার এই গোলের মাধ্যমেই ৩-১ গোলের লিড নেয় লস ব্লাঙ্কোসরা।

এরপর কয়েকবার খেলোয়াড় বদলি করে নামিয়েও ব্যবধান কমাতে পারেনি চেলসি। দু’দলই কয়েকবার আক্রমণে গিয়েছিলো তবে সফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।

আগামী ১২ই এপ্রিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে আতিথ্য দেবে বেনজেমারা। মেসি-নেইমার-এমবাপ্পের পিএসজি যে মাঠে ধূলিসাৎ হয়ে গেছে, সেখানে টুখেলের শিষ্যরা কতটা পেরে উঠবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে মাদ্রিদ যে সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে সে বিষয়ে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়।