লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা কর্তৃক ব্রাক স্কুলের এক শিশু ছাত্রী নিজ বসত ঘরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার নব গঠিত চন্দ্রগঞ্জ থানার খাগুড়িয়া গ্রামে শনিবার সকাল আনুমানিক ১০টায় ঘটনাটি ঘটেছে।

সমাজের এক শ্রেণির মাতব্বর উক্ত ধর্ষণের ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে শিশুটির পরিবারকে রবিবার পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করতে দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খাগুড়িয়া গ্রামের কুমার বাড়ির মৃত আনোয়ার উল্যার পুত্র তিন সস্তানের জনক ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের প্রতিবেশী এক দুঃস্থ পরিবারের শিশু ও স্থানীয় ব্রাক প্রি-প্রাইমারি স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী (১১)কে নিজ বসত ঘরে ঢুকে একাকী পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

সরোজমিনে গেলে ধর্ষণের শিকার শিশু ছাত্রী সাংবাদিকদের জানান, তাকে লালন পালনকারী তার বিধবা নানী তাকে ও তার ছোট বোনকে একাকী বাড়িতে রেখে তার অসুস্থ খালাতো ভাইকে দেখতে যান। এ সুযোগ নিয়ে লম্পট যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের তাদের বসত ঘরে প্রবেশ করে তাকে মুখে ওড়না ঢুকিয়ে দিয়ে জোর পূর্বক উপর্যুপরি ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর তার নানী বাড়িতে এলে শিশুটি নানীকে জানায়। বিধবা নানী ঘটনাটি এলাকার সাবেক মেম্বার আব্দুল হাই ও বর্তমান মেম্বার আব্দুল মতিন এবং ধর্ষকের বড়ভাই নুরুল আমিনসহ সমাজের মাতব্বরদের জানান। মাতব্বররা তাকে ঘটনাটির স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার আশ্বাস দেন। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সদস্যগন ও ধর্ষকের বড় ভাই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কাদের ঘটনাটি ঘটিয়ে ফেলেছে, আমরা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার উদ্যোগ নিয়েছি। সহসা আমরা ঘটনাটি নিয়ে বসে মিমাংসা করে দেব।

ব্রাক শিক্ষা হাজির পাড়া এরিয়া ম্যানেজার খোরশেদ আলমের এ ব্যাপারে জানান, আমরা রবিবার সকালে আমাদের কেন্দ্র শিক্ষিকার মাধ্যমে ঘটনাটি জেনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতা শিশু ও তার বিধবা নানীর সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমরা শিশুটিকে আইনী সহায়তা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক লোক জানান, কাদের এলাকার চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। তার অত্যাচারে আমরা আতঙ্কিত। ইতিপূর্বেও সে আরো বেশ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। এলাকায় সে প্রতিনিয়ত অস্ত্র উচিয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কেউ তার অপকর্মের প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এদিকে উক্ত যুবলীগ নেতার ব্যাপারে জেলা এবং উপজেলার নেতার সঙ্গে একাধিকবার সেল ফোনে চেষ্টা করে তাঁদের কোনো মতামত পাওয়া যায়নি।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির জানান, ঘটনাটি শুনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।