লালমনিরহাট: লালমনিরহাটে সংগ্রহ কর্মসূচীর নামে খাদ্য বিভাগের দুর্নীতি, চাষীদের কাছ থেকে গম, ধান না কিনে সিন্ডিকেট বাণিজ্য; মিল-চাতাল বন্ধ থাকলেও সেগুলোর নামে হাজার হাজার মেট্রিক টন পুরাতন কাবিখা, টিআর চাল মেশিনে “সুটার” করে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ১৬ টাকার চাল সরাসরি ৩২ টাকায় গুদামে বিক্রি করে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।

অভিযোগে জানা গেছে, জেলার চলমান সংগ্রহ অভিযানে চুক্তিবদ্ধ প্রায় সাড়ে ৪ শ’ মিলারের মধ্যে অনেক মিল-চাতাল চালু না থাকলেও সেগুলোর নামে দফায় দফায় শ’ শ’ টন টন চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে খাদ্য বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে বিপুল পরিমাণ কাবিখা/টিআর এর ১৬ টাকার চাল সরাসরি গুদামে এনে ৩২ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। সংগ্রহের নিয়ম অনুযায়ী চুক্তিবদ্ধ মিল চাতালগুলো থেকে স্থানীয়ভাবে এবং চলতি মৌসুমের ধান থেকে চাল তৈরি হয়েছে কি না তা কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রত্যায়ন করার পরই গুদামে চাল সংগ্রহ করার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে ন্যূনতম দায়িত্বও পালন করছেন কর্মকর্তারা। অভিযোগ রয়েছে, লালমনিরহাটে অন্তত অর্ধেকের বেশী মিল চাল প্রস্তুত না করে বাজার থেকে পুরাতন নিম্নমানের চাল ক্রয় করে মিলে সটার ও সিলকি করে নতুন চাল হিসেবে গুদামে ঢুকাচ্ছে। পুষ্টিহীন এসব নিম্নমানের চাল খেলে পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার মারাত্বক ঝুঁকি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতিপূর্বে চাষীদের কাছ থেকে না কিনে খাদ্য বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট করে রাতারাতি প্রায় ১ হাজার টন নিম্নমানের পুরাতন গম কিনে প্রায় ১ কোটি টাকা লুটপাট করেছে লালমনিরহাট।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, দুর্নীতি না হলে অর্থাৎ চুক্তিবদ্ধ মিলাররা কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করলে জেলায় প্রতিযোগিতামুলক ধানের বাজার অনেকটাই চাঙ্গা থাকতো এবং কৃষক কিছুটা হলেও মুল্য পেতো। কৃষকদের বৃহত্তর স্বার্থে ও খাদ্য বিভাগের দুর্নীতির মুল উৎপাটন করতে এ বিষয়ে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করে দুর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

উল্লেখ্য, লালমনিরহাট জেলা খাদ্য অফিস সূত্র জানায়, জেলায় চলতি সংগ্রহ মৌসুমে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে সংগ্রহ সম্পন্ন করা হয়েছে ১২ হাজার ৯ শ ৫৮ টন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে লালমনিরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম মাওলা ১৬ টাকার চাল সরাসরি ৩২ টাকায় গুদামে বিক্রি ও পুরাতন নিম্নমানের চাল ক্রয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, চাল ক্রয় করে গুদাম কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। তাদেরকে প্রশ্ন করুন।